খুব অল্প বয়স থেকেই আমার মধ্যে মনুষ্য স্বভাবের কয়েকটি বিরল গুণ প্রকট হয়ে উঠেছিল, আর বয়সটা তখন
4-5 এর বেশি হবে না, আর যে গুণগুলি প্রকট ছিল সেইগুলির মধ্যে অন্যতম- যে কোনো বিষয়কে প্রবলভাবে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করা আর সর্বশেষ অবস্তায় গিয়ে তবে সির্ধান্ত নেওয়া, প্রবল শান্ত স্বভাব, সর্বদা স্থির বুদ্ধি সম্পন্ন থাকা, কম কথা বলা ইত্যাদি। স্কুলের পরীক্ষায় ভালো ফল করার পরেও আমার বাবা-মা হয়তো একটা বিষয় খুব স্পষ্টই বুঝে গিয়েছিলেন যে পুঁথিগত বিদ্যার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নাই এবং সেই কারণেই হয়তো ওই
5-6 বছর বয়সেই পাঠ্য বই এর সাথে সাথে গল্পের বই না দিয়ে হাতে তুলে দিয়েছিলেন বহির্বিশ্বের সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, সাধারণ জ্ঞানের বই ইত্যাদি। ইহার ফলস্বরূপ যা হওয়ার ছিলো একটু দেরিতে হলেও সেটাই ঘটল, আমার পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতে হতে খুব খারাপে চলে গেল একদিন। জীবনে প্রথমবার পরাজয়ে আমি অল্প ভেঙে পড়লেও আমার বাবা-মা ঠিক ছিলেন। তারা আবার আমাকে উদ্বুদ্ধ করতে লাগলেন, আমার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুললেন পরবর্তী সাফল্যের জন্য নয়, পরন্তু আমাকে নতুন করে গড়ে তুললেন যাতে আমি আমার পরবর্তী জীবনে আসা পরাজয় গুলোকে মাথানত করে স্বীকার করতে পারি এবং পরের পদক্ষেপের জন্য বিদ্যুতের গতিতে নিজেকে তৈরি করতে পারি। সত্য বলছি, আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা এটাই ছিল, আজও আছে আর সারাজীবন থাকবেও। এই সময়ের পর থেকেই আমার জীবনের পটভূমি ভোরে উঠেছিল ঘটনার ঘনঘটায়, শেষ ছিলোনা উত্থান-পতনেরও, আর প্রতিটি ক্ষেতেই আমি কিছু পাই বা না পাই, জীবনদর্শনের অপরিসীম এক অভিজ্ঞতা সর্বদাই লাভ করেছি। বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন অবস্তায়, বিভিন্ন সামাজিক বৃত্তের অন্তর্গত মানুষগুলি আমাকে তাই বিভিন্নভাবে পেয়েছে, বিভিন্নরূপে দেখেছে। আর আমি পেয়েছি আমার আমিটাকে। আর আমার সম্মন্ধে অনেকের মনে জন্মানো কতকগুলি ভ্রান্ত ধারণাকে ভাঙার জন্যই আজকের আমার এই সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধটি। যখন আমি ভালো রেজাল্ট করতাম সবাই ভাবতো আমি খুব ভালো ছাত্র, কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল; আমি যখন সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম সবাই মনে করতো আমি দারুন রাজনীতিবিদ এবং কূটনীতিবিদ কিন্তু এটাও ভুল; অনেক বলে আমি নাকি
Creative মানুষ, সত্যি বলতে আমি
Creativity কাকে বলে সেটাই জানি না; অনেক বলে আমি দারুন কবিতা লিখি, আমার নাকি আরো লেখালিখিটা করা উচিত এবং আমার মধ্যে নাকি একটা কবির সব গুন বর্তমান, কি আর বলবো এর থেকে বড় মিথ্যে আমি আর একটা শুনিনি; অনেকে বলে আমি পাক্কা Businessman, আমি কিন্তু একদমই তা নই; সবাই বলে কারিগরি বিদ্যা এবং বিজ্ঞানের ওপর আমার অসাধারণ দক্ষতা আছে, এটাও সত্য নয়; এই বার অনেকে বলবে তাহলে আমি কি? খুব সহজে যদি বলি তাহলে বলব আমি জানি আমি কি, আর একটু কঠিন করে যদি বলি তাহলে বলবো আমি ঐ তুলনামূলক বা গতানুগতিক সমাজের মধ্যে পরি না, আমি শত-সহস্র নয় কোটিতেও এক এবং অদ্বিতীয়, আমি
THE APARESH SINGHA ROY. অনেক মানুষ অনেক মহান মানুষকেই জীবনের আদর্শ করে বড় হয় কিন্তু আমার আদর্শ ওই যে, অপরেশ সিংহ রায়। খুব ছোটবেলাতে পড়েছিলাম- অন্যকে জানা বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ, নিজেকে জানা জ্ঞানের উন্মেষ; যে অন্যের ওপর জেতে তার আছে দৈহিক বল, আর যে নিজের ওপর জেতে সে সর্বশক্তিমান।